সমাজবিজ্ঞান কাকে বলে ও সমাজবিজ্ঞান এর সংজ্ঞা

প্রিয় পাঠক সে আলোচনা করব সমাজবিজ্ঞান সম্পর্কে।আপনি হয়তো অনেকগুলো ওয়েবসাইট খোঁজাখুঁজি করেও মন মত প্রশ্নের উত্তর পাচ্ছেন না। আশা করব আমি আপনাদের যত সব প্রশ্নের উত্তরটি দেয়ার চেষ্টা করব। যেমন সমাজবিজ্ঞান কাকে বলে ,সমাজবিজ্ঞানের জনক কে
সমাজবিজ্ঞান কাকে বলে ও সমাজবিজ্ঞান এর সংজ্ঞা
সমাজবিজ্ঞানের সংজ্ঞা কি কি , সমাজবিজ্ঞান কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এই বিষয় নিয়ে আজকের পোস্টটি সাজানো হয়েছে। আশা করছি আপনি যদি শুরুতে শেষ পর্যন্ত ভালোভাবে পড়েন তাহলে আপনার কোন সমস্যা হবে না বুঝতে ।

সমাজবিজ্ঞান কাকে বলে

সমাজবিজ্ঞান হলো মানুষের সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্রিয়াকর্মের বিজ্ঞান বলা হয়। যেমন মানুষের আচার-আচরণ , কথাবাত্রা , চলাফেরা , রীতিনীতি , রাজনৈতিক আলোচনা দলগত ইত্যাদি এই ধরনের পারস্পরিক সমস্ত বিষয়কে সমাজবিজ্ঞানের অংশ হিসেবে ধরা হয়। জেনেও মানুষের ও সমাজের


উপকৃত করে এবং অন্যকে সহায়তা করে ।মানুষের ধ্যান-ধারণাকে প্রাকৃতিক বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত আলোচনাকে সমাজবিজ্ঞান বলে।

সমাজবিজ্ঞান এর জনক কে 

সমাজবিজ্ঞান এর ইংরেজি শব্দ হলো (Sociology)।এই শব্দটির আরও একটি ল্যাটিন শব্দ রয়েছে (Societus)। (Society)এর অর্থ হলো সমাজ ও (Logos) এর অর্থ হলো বিজ্ঞান। দুইটি শব্দ একসাথে যোগ করে হয়েছে সমাজবিজ্ঞান ।তাহলে এটিকে ভাঙলে দাঁড়ায় সমাজের বিজ্ঞান । ফ্রান্সের এক বিজ্ঞান বা সমাজবিদ অগাস্ট কোঁৎ সর্বপ্রথম সমাজবিজ্ঞান শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে। এবার আসুন জানি সমাজ বিজ্ঞানের জনক কে কে।
  • সমাজবিজ্ঞানের জনক হলেন অগাস্ট কোঁৎ।এবং আধুনিক সমাজতন্ত্রের জনক হল কার্ল-মার্কস।

সমাজবিজ্ঞান এর সংজ্ঞা

সমাজবিজ্ঞান হল সামাজিক বিজ্ঞানের সমূহ। যেমন অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান , রাজনীতি , সমাজের জন্য কল্যাণ ইত্যাদি এর মধ্যে আলোচনা করা রয়েছে বলেই একে সমাজবিজ্ঞানের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে । তবে এ সমাজবিজ্ঞানের কিছু সংজ্ঞা রয়েছে যা আমাদের সমাজবিজ্ঞানের জনকরা প্রদান করে গেছেন। তাহলে চলুন সমাজবিজ্ঞানের সংজ্ঞা জেনে নিন
  • এমিল ডুর্খেইম এর সংজ্ঞা
সমাজ বিজ্ঞান হলো অনুষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠানের সামাজিক বিজ্ঞান।
  • ম্যাক্স ওয়েবার এর মত সমাজবিজ্ঞানের সংজ্ঞা
সমাজবিজ্ঞান এমন একটি বিজ্ঞান যা সামাজিক কার্যাবলীগুলোর কর্ম কারণ ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য এগুলোকে বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত রাখা কে সমাজবিজ্ঞান বলে ।
  • রবার্ট এম ম্যাকাইভার এর মতে সমাজবিজ্ঞানের সংজ্ঞা
সমাজবিজ্ঞান হল মানুষের সামাজিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করে এই সম্পর্কের জালক কে আমরা সমাজ বলি।ম্যাকাইভার সংজ্ঞার সঙ্গে আমেরিকার সমাজবিজ্ঞানী একমত হন।
  • জন এফ. কিউবার এর মতে সমাজবিজ্ঞানের সংজ্ঞা
মানব সম্পর্কের বৈজ্ঞানিক জ্ঞান হল সমাজবিজ্ঞান বলে।
  • আর.টি. শেফার মতে সমাজবিজ্ঞানের সংজ্ঞা
সমাজবিজ্ঞান হলো সামাজিক আচরণ ও মানুষের গোষ্ঠী সমূহের পরিকল্পিত পাটকে সমাজবিজ্ঞান বলে
  • মরিস গিন্সবাগ এর মতে সমাজবিজ্ঞানের সংজ্ঞা
সমাজবিজ্ঞানের সবচেয়ে ব্যাপক অর্থে মানব সমাজের পারস্পরিক ক্রিয়া বলে। আন্তসম্পর্ক এবং এগুলোর অবস্থা ও পরিণতি সম্পর্কে আলোচনা করাকে সমাজবিজ্ঞান বলে ।
  • আর.ই.পার্ক এর মতে সমাজবিজ্ঞানের সংজ্ঞা
সমাজবিজ্ঞান হচ্ছে এমন এক বিজ্ঞান যেখানে মানুষের যোগ্য আচরণ আলোচিত করে এবং ভালো কর্ম কে তুলে ধরে একে সমাজবিজ্ঞান বলে ।

সমাজবিজ্ঞান কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়

সমাজবিজ্ঞান শব্দটি সর্বপ্রথম ব্যবহৃত হয়েছিল ১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দে । ১৮৭৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে সমাজবিজ্ঞান নামক একটি কোর্স প্রথম শেখানো হয় । ১৮৯৬ সালে জার্নাল প্রতিষ্ঠা করে । ১৮৯০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয় প্রাচীনতম সমাজবিজ্ঞানের কোর্সবশুরু করে। ১৮৯২ সালে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় এর প্রথম কোর্স শুরু করে। ১৯২৫ সালে শিক্ষার্থীরা তৃতীয়বারের মতো সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করে । ১৮৯৩ সালে সমাজবিজ্ঞান আন্তর্জাতিক সহায়তা শুরু করে ।

সমাজবিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনীয়তা

আমাদের সবারই সমাজবিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে । সমাজ বিজ্ঞান পাঠ করলে আমাদের সমাজ ও মানুষের উপর বিজ্ঞানসম্মত বিষয় বুঝতে পারব । সমাজবিজ্ঞান পাঠ করলে আমরা সমাজবিজ্ঞানের নিয়ম নীতি সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাব। এতে আমাদের নিজের ক্ষেত্রেও সমাজের ক্ষেত্রে খুব উপকারী দিক হিসাবে বিবেচিত করা হবে । এবার চলুন কিছু সমাজ বিজ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা দেখিনি।
  • জবিজ্ঞানের রীতিনীতি সম্বন্ধে জ্ঞান অর্জন করতে পারব ।
  • সমাসমাজ ভিত্তিক পরিকল্পনা ও কাজকর্মের বাস্তব কার্যক্রম করার জন্য সমাজ বিজ্ঞানের পাঠ প্রয়োজনীয়।
  • সমাজবিজ্ঞান পড়লে আমরা মানব সমাজের জ্ঞান অর্জন করতে পারবে। 
  • সামাজিক ক্ষেত্রে সমাজ বিজ্ঞানের নীতি নির্ধারিত করার জন্য বাস্তবায়ন করতে পারব ।
  • সমাজ বিজ্ঞানের বিজ্ঞান সম্মত আলোচনার জ্ঞান অর্জন করতে পারব ।
  • অর্থনৈতিক ও সামাজিক জ্ঞান সম্পর্কে বিজ্ঞানসম্মত ধারণ ।
  • সমাজবিজ্ঞান পড়লে সমাজের সমস্যা সমূহ সহ সহজে অনুসন্ধান করা যাবে ।
  • সমাজ বিজ্ঞান থেকে জ্ঞান অর্জন করলে সমাজের ও মানুষের বিভিন্ন মর্যাদা ও তার অন্তর্নিহিত শত্রুপাত উপলব্ধি করতে পারবো যা সহজে সমাধান করা যাবে ।
এছাড়াও আরো সমাজবিজ্ঞান পাঠের অনেকগুলো সূত্রপাত ও উপকারিতা রয়েছে। যা আমরা সহজেই পরিবারের ও সমাজের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করার অল্পতে সম্ভব । সেজন্য আমাদের সমাজবিজ্ঞান পড়া গুরুত্ব অপরিসীম।

লেখক এর মতামত

সমাজ বিজ্ঞান এমন একটি বিজ্ঞান যেখানে মানুষ ও সমাজের বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে উপস্থিত করা হয়েছে । যা পড়লে আমরা সহজেই সমাজের মানুষের ও বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করা আমাদের কাছে সহজ হয়ে যাবে । তাই আমাদের সমাজবিজ্ঞান করার উপকারিতা অনেক বেশি রয়েছে ।

আমরা চাই যে সাবজেক্ট নিয়ে করি না কেন সমাজবিজ্ঞান নিয়ে একটু জ্ঞান অর্জন করা খুবই জরুরি ।কারণ সমাজবিজ্ঞান করলে আমরা সহজে সমাজ সম্পর্কে জানতে পারব । এছাড়াও নানা সমস্যা রয়েছে যা সমাজবিজ্ঞানে সুন্দরভাবে তুলে ধরা রয়েছে। 

তাই আমাদের একটু হলেও সমাজবিজ্ঞান বইটি পড়া উচিত।এই পোস্টটি পড়ে আপনি যদি উপকৃত হন তাহলে আপনার পরিচিত দের কাছে শেয়ার করুন এবং আপনার মূল্যবান কমেন্টটি করে আমাদেরকে জানিয়ে যান যে আপনার কেমন লাগলো

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url